October 22, 2024, 5:30 am

আ’লীগের বিজয়ী কাউন্সিলরদের শুভেচ্ছা, ফাঁসছেন বিএনপি নেতারা

আ’লীগের বিজয়ী কাউন্সিলরদের শুভেচ্ছা, ফাঁসছেন বিএনপি নেতারা

স্টাফ রিপোর্টার  ।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে প্রার্থী হওয়া নিয়ে অস্থিরতা ছিল বরিশাল মহানগর বিএনপিতে। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় ১৯ জন আজীবন বহিষ্কার হয়েছেন। ১২ জুন নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পরও দলে অস্থিরতা থামছে না। কাউন্সিলর পদে বিজয়ী আওয়ামী লীগ নেতাদের নানাভাবে শুভেচ্ছা জানানোয় ও উল্লাস প্রকাশ করায় দলীয় খড়্গে পড়ছেন বিএনপি নেতারা। এরই মধ্যে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পেয়েছেন মহানগর মহিলা দলের ফারহানা ইয়াসমিন তিথি। মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কে এম শহীদুল্লাহসহ আরও কয়েকজন একই অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারেন বলে জানা গেছে।

২০ নম্বর ওয়ার্ডে আবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাইয়েদ আহমেদ মান্না। গত ৫ বছরে নানা অপকর্মের কারণে মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর খলিফাখ্যাত ৬ জনের অন্যতম মান্না। ফুলের মালা গলায় জড়ানো মান্নাকে মহিলা দল নেত্রী তিথির মিষ্টি খাওয়ানোর একটি ছবি সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এ ঘটনায় কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না– জানতে চেয়ে তিথিকে শোকজ নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় মহিলা দল। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বরিশাল সিটি নির্বাচনে দল অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এর পরও উক্ত নির্বাচনে তথাকথিত এক কাউন্সিলরকে আপ্যায়ন করিয়েছেন, যা দল বা দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা’।
এ প্রসঙ্গে মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ বলেন, দলের সিদ্ধান্ত যাঁরা অমান্য করবেন, জিয়ার আদর্শ মানবেন না, তাঁদের দল কোনোভাবে ক্ষমা করবে না। বরিশালের মহিলা দলনেত্রী তিথিকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিনি এখনও জবাব দেননি। জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে তিথি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি কাউন্সিলর মান্নার একই মহল্লাতে থাকেন। এলাকাতে নানা চাপের মুখে থাকতে হয়। তাঁকে জোর করে মিষ্টি খাওয়ানোর অনুষ্ঠানে নেওয়া হয়েছে।

তিথির ঘটনার রেশ না কাটতেই সোমবার সকালে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কে এম শহীদুল্লাহর একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ওই ছবিতে দেখা যায়, বিএনপি নেতা শহীদুল্লাহ ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন রয়েলকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। শহীদুল্লাহ একই ওয়ার্ডে টানা তিনবার কাউন্সিলর ছিলেন। শহীদুল্লাহর মোবাইল ফোনে কল করে ছবির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি একটি সভায় থাকার অজুহাত দেখিয়ে সংযোগ কেটে দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিটি নির্বাচনে সংশ্লিষ্টতা থাকার অজুহাতে আরও কয়েকজন বিএনপি নেতা অভিযুক্ত হতে পারেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন– মহানগর বিএনপির ১ নম্বর সদস্য আ ন ম সাইফুল আহসান আজিম, জেলা যুবদলের সভাপতি এইচ এম তছলিম উদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাফিজ উদ্দিন বাবলু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান পিন্টু।

২২ নম্বর ওয়ার্ডে আজিম ও তাঁর স্ত্রী মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জেসমিন সামাদ প্রার্থী হয়েছিলেন। আজিম প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে বহিষ্কার এড়াতে পারলেও শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে ছিলেন তাঁর স্ত্রী। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, স্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন আজিম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউর রহমান বিপ্লব গলায় মালা পরা অবস্থায় ডান পাশে দাঁড়ানো হাস্যোজ্জ্বল জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বাবলু। স্বেচ্ছাসেবক দলের পিন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত এক কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রচারে ভূমিকায় ছিলেন। জাপার মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসের ছোট ভাই জেলা যুবদল সভাপতি তছলিম। ভাইয়ের নির্বাচনে গোপনে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে তছলিমের বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির সমকালকে বলেন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর রয়েল ফুল নিয়ে সোমবার সকালে কে এম শহীদুল্লাহর বাসায় হাজির হন। পরিস্থিতির মুখে শহীদুল্লাহকে ফুল গ্রহণ ও ছবি তুলতে হয়েছে। তবে সব ধরনের অভিযোগই যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ভোটের আগে-পরে দলের নেতাকর্মীরা কোনোভাবে সংশ্লিষ্ট হয়ে থাকলে দলীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © All rights reserved © 2024 DailyBiplobiBangladesh.com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com